কারিগরি শিক্ষার গুরুত্ব
কারিগরি শিক্ষার গুরুত্ব অপরিসীম।একটি দেশের উন্নতি লুকিয়ে আছে কারিগরি শিক্ষার মধ্যে।দৈনন্দিন জীবনে পাচটি মৌলিক চাহিদা রয়েছে,তার মধ্যে শিক্ষা হলোএকটি চাহিদা।শিক্ষা ছাড়া কোনো জাতির সামনে এগিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়।তবে সেই শিক্ষা সাধারণ শিক্ষা বা কারিগরি শিক্ষা হতে পারে।একটি দেশ কে উন্নত দেশে পরিনত করতে হলে সাধারণ শিক্ষার পাশাপাশি কারিগরি শিক্ষার গুরুত্ব ও অপরিসীম।তাই একটি দেশ উন্নয়নশীল দেশে পরিণত করতে হলে কারিগরি শিক্ষার একান্ত প্রয়োজন।
সূচিপত্রঃকারিগরি শিক্ষার গুরুত্ব
- কারিগরি শিক্ষার গুরুত্ব
 - কারিগরি শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা
 - মানবসম্পদ উন্নয়নে কারিগরি শিক্ষা
 - বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে কারিগরি শিক্ষার গুরুত্ব
 - ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে কারিগরি শিক্ষার অবদান
 - অর্থনৈতিক উন্নয়নে কারিগরি শিক্ষার ভূমিকা
 - বাংলাদেশে কারিগরি শিক্ষার গুরুত্ব
 - দেশের উন্নয়নে কারিগরি শিক্ষার গুরুত্ব
 - শেষ কথা
 
কারিগরি শিক্ষার গুরুত্ব
  কারিগরি শিক্ষা মূলত হাতে কলমে শিক্ষা।এ জন্য কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত হলে
  বাস্তবতা সম্পর্কে জ্ঞান,বুদ্ধি বেশি থাকে।কারিগরি শিক্ষার মাধ্যমে
  শিক্ষার্থীকে প্রযুক্তি,শিল্প, কৃষি ও কলকারখানার যন্ত্রপাতি ব্যবহারের জন্য আধুনিক ও
    বিজ্ঞান সম্মতভাবে প্রশিক্ষন দেওয়া হয়।কর্মস্থলে অবশ্যই দক্ষ কর্মীই প্রয়োজন
    হয়,শিক্ষিত বেশি হয়ে যদি দক্ষতা না থাকে তাহলে সেই কর্মী দিয়ে কোনো সফলতা বয়ে
    আনা সম্ভব নয়।এই জন্যই বার বার বলা হয়েছে যে, কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত হতে এতে
    দক্ষতা বাড়বে ,সেই সাথে দক্ষ কর্মীও বাড়বে । এতে দেশের উন্নতি ও বাড়বে।
কারিগরি শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা
  বর্তমান বিশ্বের প্রেক্ষাপটে কারিগরি শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম।কারিগরি শিক্ষা একটি উৎপাদন ভিত্তিক শিক্ষা ব্যবস্থা, যা দেশের জাতীয় আয়
    বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। কারিগরি শিক্ষা শ্রমিকের উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি করে, এতে করে
    শ্রমিক সহজেই দেশীয় ও আন্তর্জতিক শ্রম বাজারে প্রবেশ করে দক্ষ জনশক্তি ও
    বৈদেশিক মুদ্রা আহরন বৃদ্ধি করে।কারিগরি শিক্ষার ফলে হাতে ,কলমে শিক্ষা পেয়ে বিভিন্ন বিষয়ে ধারণা লাভ
    করতে পারে বিধায় যে কোনো কাজে সফলতা বৃদ্ধি পায়।দারিদ্রতা বিমচনে, কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টিতে,আত্বকর্মসংস্থান, উদ্যোক্তা উন্নয়ন ও উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধিতে কারিগরি
    শিক্ষার  প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম।
মানবসম্পদ উন্নয়নে কারিগরি শিক্ষা
বাংলাদেশের সব চেয়ে বড় সমস্যা হলো বেকারত্ব।বেকারত্ব কোনো দেশের জন্য অভিশাপ।বেকারত্বের কারনেই দেশের উন্নয়ন করা সম্ভব নয়। কোনো দেশের বেকারত্ব দূর করতে কারিগরি শিক্ষার অবদান অপরিসীম।কারিগরি শিক্ষার মাধ্যমে মানুষ বাস্তব প্রশিক্ষন প্রাপ্ত হয়।নিজে নিজে যে কোনো কর্ম করে খাওয়ার দক্ষতা অর্জন হয়।বর্তমানে চাকুরির বাজার খুবই খারাপ।এই বিষয়ে আমাদের  মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই বলেছেন,কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত হওয়ার জন্য।কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত হলে চাকরির পেছনে ছুটতে হবে না।নিজেই কোনো না কোনো কর্ম করে জীবিকা নির্বাহ করা যাবে।কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত হলে নিজের কর্মের পাশাপাশি আরোও অনেককেই কাজে নিয়োগ দেয়া যায়।তাই বলা যায় যে,কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত হলে বেকারত্ব এর হার কমে যাবে ফলে দেশে উন্নয়ন হবে।
বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে কারিগরি শিক্ষার গুরুত্ব
    বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে কারিগরি শিক্ষার গুরুত্ব অপরিসীম।আমরা অনেক সময় যখন
    চাকুরির পেছনে ছুটতে ছুটতে হতাশ হয়ে যাই,তখন মনে হয় নিজের কাছে নিজেকে বোঝা মনে
    হয়,যদি আপনি কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে থাকেন তাহলে খুব সহজেই বৈদেশিক মুদ্রা
    আয় করে দেশের এবং নিজের উন্নতি করা সম্ভব।সামান্য তিন থেকে ছয় মাসের
    ফ্রিল্যান্সিং কোর্চ করে বৈদেশিক মুদ্রা আয় করতে পারবেন।এই পর্যন্ত
    ফ্রিল্যান্সিং এর মাধ্যমে অনেকেরই বেকারত্ব দূর হয়েছে।বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের
    মাধ্যমে দেশের ও উন্নয়ন করা সম্ভব।আমাদের দেশে প্রায় সব জেলাতেই কারিগরি
    প্রশিক্ষন প্রতিষ্ঠান রয়েছে,যেখানে বিনা মূল্যে বিভিন্ন ধরণের ট্রেনিং করানো
    হয়।এসব কোর্চ মূলত বিনা মূল্যে করানো হয়।এ সকল প্রশিক্ষণ কারিগরি শিক্ষার আওতার
    মধ্যেই পরে।এখান থেকে প্রশিক্ষন নিয়ে বিভিন্নভাবে বৈদেশিক মুদ্রা আয় করা সম্ভব।
  
  ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে কারিগরি শিক্ষার অবদান
    ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে কারিগরি শিক্ষার বিকল্প নেই।জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর
    রহিম বলেছেন,কারিগরি প্রশিক্ষন নিয়ে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলাদেশ ও তার কণ্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ডিজিটাল
      বাংলাদেশ গঠনে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।
  
  বর্তমান সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশে দেশের এক স্থান থেকে অন্য স্থানে টাকা পাঠাতে
  মাত্র পাচ মিনিট সময় লাগে।এটিই হলো ডিজিটাল বাংলাদেশে ডিজিটাল পদ্ধতি।যার ফলে
  মানুষ উপকার পেয়ে থাকে।এটি হলো তথ্য প্রযুক্তি বাংলাদেশের উদাহরণ।আর এসব তথ্য
  প্রযুক্তির জ্ঞান দেওয়ার জন্যই কারিগরি প্রশিক্ষন কেন্দ্র খোলা হয়েছে।যাতে এখান
  থেকে প্রশিক্ষন নিয়ে বাংলাদেশ কে ডিজিটাল  বাংলাদেশে পরিণত করতে পারে।আজকের ডিজিটাল বাংলাদেশের কনসেপ্ট হলো এমন-যেখানে নিজের ঘরে বসে বিশ্বের যে
    কোনো স্থানে যোগাযোগ রক্ষা করা যায়।  
অর্থনৈতিক উন্নয়নে কারিগরি শিক্ষার ভূমিকা
বাইরের দেশগুলোতে কারিগরি শিক্ষাকে অধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়। কেননা একমাত্র এই
      কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে বিশাল ভূমিকা পালন করা
      যায়।বাংলায় একটা প্রবাদ আছে,কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত হলে ,কর্ম মিলে ঘরে
      ঘরে।তাই বাহিরের দেশ গুলোতে কারিগরি শিক্ষা বহাল থাকায় বেকারত্বের প্রভাব পরে
      না।বাহিরের দেশগুলোতে ছোট,বড় সবাই কোনো না কোনো কর্মে ব্যস্ত থাকে।কেউ একটু
      সময় ও নষ্ট করে না।তাই তাদের বেকারত্বের অভিশাপ পোহাতে হয় না।ঠিক বাহিরের দেশ
      গূলোর মতো যদি বাংলাদেশেও কারিগরি শিক্ষার মূল্য ঠিকভাবে দেওয়া হতো তাহলে
      অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশগুলোর পাশে বাংলাদেশের নামও উঠে আসতো।বাংলাদেশে
      কারিগরি শিক্ষা কে অবজ্ঞার চোখে দেখা হয়।কেউ কেউ তো কারিগরি শিক্ষাকে অভিশাপ
      মনে করেন,অনেকের ধারণা,অন্য কোনো ভার্সিটিতে চাঞ্জ না পেয়ে নিরুপায় হয়ে
      কারিগরি শিক্ষার দিকে অগ্রসর হচ্ছে।বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে থেকে এই ভূল
      ধারণা যদি না যায়,তাহলে বাংলাদেশের উন্নয়ন করা সম্ভব নয়।কারণ,অর্থনৈতিক
      উন্নয়নের সব চেয়ে বড় কারণ হলো কারিগরি শিক্ষা যা মানুষকে হাতে,কলমে শিক্ষা
      দিয়ে দক্ষ কর্মী হিসেবে গড়ে তুলতে সাহায্য করে।অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য
      কারিগরি শিক্ষা কে কাজে লাগাতে হবে এবং দক্ষ কর্মী গড়ে তুলতে হবে।মনে রাখতে
      হবে যে, মাথাপিছু আয় বৃদ্ধির মাধ্যমেই দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন করা
      সম্ভব।
  
 
  বাংলাদেশে কারিগরি শিক্ষার গুরুত্ব
    একটা সময় ছিলো বাংলাদেশে কারিগরি শিক্ষার কোনো মূল্যই ছিলো না।যখন দেখা গেলো
      দেশে  বেকারত্বের হার ক্রমশই বেড়েই চলছে বা চাকরীর অবস্থাও খুব একটা
      ভালো নয়।তখন বাংলাদেশের তরুণ সমাজ কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে নিজের দক্ষতা
      বাড়িয়ে নিজে নিজে কর্মে আগ্রহী হচ্ছেন।কারণ,কারিগরি শিক্ষা এমন একটা 
      শিক্ষা ব্যবস্থা  যেখানে দক্ষ কর্মী হিসেবে গড়ে তোলা হয়।উন্নত দেশগুলোর তুলনায় এখনও আমাদের দেশে কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত কর্মীর
      সংখ্যা কম। দেশের দ্রুত উন্নতির জন্য কারিগরি শিক্ষায় গুরুত্ব বাড়ানোর বিকল্প
      নেই।দেশে-বিদেশে  কারিগরি জ্ঞানসম্পন্ন কর্মীর চাহিদা থাকা সত্বেও এক
      সময় বাংলাদেশে কারিগরি শিক্ষার তেমন একটা গুরত্ব দেওয়া হতো না।
  
  আওয়ামীলিগ ক্ষমতায় আসার পর থেকে কারিগরি শিক্ষাকে মূল্যায়ন করা হয়। কারিগরি শিক্ষার বিষয়ে সব ধরনের অবহেলা দূর করা প্রয়োজন। দেশে মানসম্মত
    কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বাড়াতে হবে,সেই সাথে কারিগরি শিক্ষার প্রতি
    মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টানোর ব্যাপারে উদ্যোগ নেয়া দরকার। দেশে বিদ্যমান
    নামসর্বস্ব বেসরকারি কারিগরি প্রতিষ্ঠানগুলোর সার্বিক কর্মকাণ্ড কঠোর
    মনিটরিংয়ের আওতায় আনাও জরুরি।
দেশের উন্নয়নে কারিগরি শিক্ষার গুরুত্ব
   বাংলাদেশে যদি কারিগরি শিক্ষা ব্যবস্থা শতভাগ করা হয়, তাহলে দেশের উন্নয়ন
      খুব তারাতারি করা সম্ভব।বাহিরের দেশের উন্নয়নের একমাত্র কারণই হলো ,তারা
      কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে নিজেকে দক্ষ কর্মী বানিয়েছেন।আরও একটা কারণ
      হচ্ছে,বাহিরের দেশে কোনো কাজ কে তারা ছোট করে দেখে না।এক কথায় তারা খুব
      পরিশ্রমী।আমাদের দেশের মানুষ গুলো হলো আরামপ্রিয় এবং সেই সাথে
      শিক্ষাব্যবস্থারও বেহাল দোষা।কোনো দেশের উন্নতি তখনই সম্ভব ,যখন সেই দেশের
      মানুষগুলোর মধ্যে উন্নতি আসবে।আর কোনো জাতির উন্নতি তখনই সম্ভব যখন তার
      শিক্ষা ব্যবস্থা,তার আগ্রহ সব কিছু মিলে ।কারিগরি শিক্ষায় হাতে ,কলমে শিক্ষা
      দেওয়া হয় এতে দক্ষতা বাড়ে খুব তারাতারি।আর দক্ষ কর্মী কে কখনো বসে থাকতে হয়
      না।একজন দক্ষ কর্মী কখনোই দেশের বোঝা হয় না।বরং দক্ষ কর্মীর জন্যই দেশের
      উন্নয়ন সম্ভব হয়ে থাকে। পরিশেষে বলা যায় যে, একটা দেশ বা জাতির উন্নয়নে কারিগরি শিক্ষার কোনো বিকল্প
      নাই। 
  
  শেষ কথা কারিগরি শিক্ষার গুরুত্ব
   সর্বশেষে বলা যায় যে,কোনো দেশের উন্নতির জন্য কারিগরি শিক্ষার গুরুত্ব
      অপরিসীম।একটি দেশ বা জাতির উন্নতির পেছনে কারিগরি শিক্ষািই হলো একমাত্র
      হাতিয়ার।কারিগরি শিক্ষার মাধ্যমে দক্ষ কর্মী পাওয়া যায়।আর একটা দেশ বা জাতির
      উন্নয়নের জন্য দক্ষ কর্মীর প্রয়োজন।।
  


অর্ডিনারি সিসি’র নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url